সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

শনিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২২

ধাতুক্ষয় রোগে হোমিওপ্যথিক ঔষধ

 

 ধাতুক্ষয় রোগে হোমিওপ্যথিক চিকিৎসা :

শুক্রমেহ, ধাতুমেহ বা ধাতুক্ষয় রোগের সেরা হোমিও ওষুধ - সেলেনিয়াম (Selenium)

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে সাফল্যজনকভাবে শুক্রমেহ বা ধাতুমেহ বা ধাতুক্ষয় রোগের চিকিৎসা করা যায়। অবাঞ্ছিত শুক্রক্ষরণ বা শুক্রমেহ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ঔষধের ব্যবহার নিরাপদ ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন।

সঠিক নিয়মে ধাতুমেহ বা শুক্রমেহ চিকিৎসা হলে এই জটিল ও কঠিন রোগটি যেমন স্থায়ীভাবে নিরাময় হয়, একই সাথে রোগীর অসুস্থতার কারণে হারানো স্বাস্থ্য পুনঃগঠনেও সহায়তা করে।

হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেলেনিয়াম প্রয়োগে শুক্রমেহ বা ধাতুক্ষয় রোগের চিকিৎসা

রোগী বিবরণীঃ

সাম্প্রতিক সময়ে আমার নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে একটি রোগীর অবাঞ্ছিত শুক্রক্ষরণ বা শুক্রমেহ রোগের চিকিৎসা বিবরণী আজ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। চিকিৎসার রোগীলিপি বিবরণীটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমত উক্ত রোগীর চিকিৎসাতে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে কিভাবে শুক্রমেহ বা ধাতুমেহ রোগ চিকিৎসা করা যায় তা যেমন জানা যাবে।

পাশাপাশি জটিল ও পুরাতন রোগ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কিভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং চিকিৎসা পদ্ধতিই বা কেমন হলে একজন রোগী প্রকৃত অর্থে সুস্থতা লাভ করতে পারবেন সে সম্পর্কেও কিছু প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেবে।

বলা বাহুল্য, উক্ত রোগীর চিকিৎসাকালে আমি নিজেও আমাদের হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বৈচিত্রময় প্রয়োগ কৌশল সম্বন্ধে কিছুটা জানতে পেরেছি।



প্রাসঙ্গিক লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন-

যৌন দূর্বলতা চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রধান ৫টি হোমিওপ্যাথি ওষুধ

ধাতু দুর্বলতার সেরা হোমিওপ্যাথিক ওষুধ এগনাস কাস্ট

যাই হোক আসুন চিকিৎসা বিবরণী শুরু করা যাক। এখানে উল্লেখ্য যে, এখানে উল্লেখিত লক্ষণগুলো উক্ত রোগীর নিজের মুখে বলা কথাগুলোকে একটু মার্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

কেস স্টাডি -১।

তারিখঃ ০৬-০৫-২০১৭ইং।

নামঃ ক—।

বয়সঃ আনুমানিক ৪০ হবে।

পেশা ও অবস্থানঃ

একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরিরত মাঠকর্মী।

প্রধাণত তাকে বিভিন্ন জায়গায় চাকুরীর কাজে ঘুরে বেড়াতে হয়। প্রতিদিনের খাবার হোটেল বা রেস্তোরাতে খেয়ে থাকেন। ধার্মিক মুসলমান। কোন প্রকার মাদক, পান বা সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস নেই। তবে প্রচুর চা খান।

অসুস্থতার বিবরণঃ

আনুমানিক ১০ বৎসর যাবৎ অবাঞ্ছিত শুক্রক্ষরণ সমস্যায় ভুগছেন। অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন। কোন কাজ হয়নি। সমস্যা অতটাই গুরুতর যে, এর কারণে সময়মত নামাজটাও পড়তে পারেন না। ঘুমের মধ্যে, চলাফেরার সময়, কোন মহিলার সঙ্গে কথা বলার সময়, স্বাভাবিক কারণে বা মানসিক দুঃশ্চিন্তায় একটু উত্তেজিত হলে, প্রস্রাব বা পায়খানার সময় প্রস্ট্রেটিক রস বিন্দু বিন্দু করে বের হয়।

রোগীর ভাষায়-

আমার অনবরত ধাতু বের হয়। একটু পরিশ্রমের কাজ করলে, রোদ্রে যাতায়াত করলে, যানবাহনে নারীদের শরীরের ঘর্ষণে এমনিতেই ধাতু বের হতে থাকে। আমি প্রায়ই অনুভব করি শুক্রস্রাব বা ধাতু বের হয়ে আমার পায়জামা ভিজে আছে।

শরীরটা দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। অর্শ আছে। পায়খানা কষাভাব হলেই পায়খানার সাথে প্রচুর রক্ত বের হয়। প্রস্রাব বা পায়খানার পর অনেকক্ষণ যাবত ফোঁটায় ফোঁটায় অসাড়ে প্রস্রাব নির্গমন হতে থাকে। এতে কাপড় নষ্ট হয়।

আমি এ নিয়ে খুব দুঃচিন্তায় আছি। বউয়ের সাথে স্বাভাবিকভাবে যৌন মিলনে কোন আনন্দ পাইনা। ইচ্ছা আছে কিন্তু শক্তি পাইনা। লিঙ্গ দাঁড়ায় না বা দাঁড়ালেও বেশিক্ষণ সবল থাকেনা। অনেক তাড়াতাড়ি ধাতু বের হয়ে যায়। শেষে বউয়ের সাথে এনিয়ে খালি ঝগড়া হয়।


রোগী পর্যবেক্ষণঃ

আমি লক্ষ্য করলাম রোগী তোঁতলিয়ে কথা বলে। জিজ্ঞাসায় জানতে পারলাম ২০ বৎসর যাবৎ সে তোঁতলামি সমস্যায় আক্রান্ত। পাশাপাশি কোষ্ঠবদ্ধতায় ভুগছেন অনেকদিন যাবৎ। যদিও তাতে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। কেননা বাইরের খাবার খান বলে কোষ্ঠবদ্ধতা হতেই পারে -এই হলো তার পর্যবেক্ষণ।

সামান্য শারিরীক বা মানসিক পরিশ্রম তাকে অসুস্থ করে তোলে। রোর্দ্র সহ্য হয় না। অত্যাধিক চা পান করেন। এতে যে তার সমস্যা হতে পারে বা চা তার রোগলক্ষণ বৃদ্ধি করতে পারে, তা নিয়ে কখনও ভাবেননি। জীবনিশক্তি খুব দুর্বল।

১ম ঔষধ-

Agnus Cast Q – ১০ ফোঁটা করে সকালে ও রাতে, সামান্য পানিসহ খালিপেটে।

পর্যবেক্ষণঃ ৩০-০৫-২০১৭ইং

কোন পরিবর্তন নেই। বরং আরো বেশী সমস্যা হচ্ছে।

২য় ঔষধ-

Nat. Mur 12x – ৪টি করে বড়ি দিনে ২ বার।

২২-০৬-২০১৭ইং

কোন পরিবর্তন নেই। কোষ্ঠবদ্ধতায় খুব কষ্ট পাচ্ছেন।

৩য় ঔষধ-

Ginseng Q –– ১০ ফোঁটা করে সকালে ও রাতে, সামান্য পানিসহ খালিপেটে।

২৬-০৮-২০১৭ইং

কোন পরিবর্তন নেই। উল্টো প্রথম ৩ দিন প্রচুর মাথাব্যথা করেছে। শেষে প্যারাসিটামল যাতীয় ঔষধ খেতে হয়েছে।

৪র্থ ঔষধ -

Bio-Combination – BC ২৭

জার্মানির ১ আউন্স দিলাম। ৪টি করে দিনে ২ বার, চুষে খাবেন।

০৫-০১-২০১৮ইং

রোগীকে কিছুটা বিরক্ত ও হতাশ মনে হলো। তার কোন রোগলক্ষণেরই কোন প্রকার উন্নতি হচ্ছেনা বলে ঝাঁঝালো জবাব দিচ্ছিল। বলা বাহুল্য, চিকিৎসা কাজে আসছেনা বলে আমিও কিছুটা লজ্জ্বিত ও চিন্তিত ছিলাম। পরিশেষে তাকে কিছুটা অভয় দিয়ে বললাম, আপনাকে আমি এই মূহুর্তে আর কোন ঔষধ দিবনা। ১ মাস পরে দেখা করুন।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সফল হতে হলে দ্বিতীয়বার রোগীলিপি পড়ে দেখার গুরুত্ব

আমি তার কাছ থেকে ১ মাস সময় নিলাম। সময়টা নেয়া জরুরী ছিল। কারণ ইতিমধ্যে সে অনেক ঔষধ খেয়েছে। ফলশ্রুতিতে তার শরীরে রোগসৃষ্ট সমস্যার চাইতেও ঔষধসৃষ্ট লক্ষণ বেশী প্রকাশ পেয়েছিল।

তাছাড়া আমাকে তার রোগীলিপি আরও একবার ভালো করে পড়ে সামগ্রীক লক্ষণসমূহের পূণরায় পর্যালোচনা করে সঠিক ঔষধটি বাছাই করার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন ছিল।

০৮-০৩-২০১৮ইং

রোগী আসতেই আমি তাকে বললাম- আমি আজও আপনাকে কোন ঔষধ দিচ্ছিনা তবে ১ ফোঁটা ঔষধ মুখে খাওয়াবো। ব্যস এইটুকুই। আমি আপনাকে ঠিক ১৫ দিন পর পর একই নিয়মে এই ঔষধটি খাওয়াব। আপনি শুধু খালিপেটে আমার চেম্বারে ঔষধ খেতে আসবেন।


শুক্রমেহ, ধাতুমেহ বা ধাতুক্ষয় রোগে সেলেনিয়াম এর ব্যবহার

ঔষধটি ছিল সেলেনিয়াম ৩০ শক্তির ঔষধ। ১ ফোঁটা মাত্র মুখের মধ্যে দিয়ে বিদায় করে দিলাম। সেদিন থেকে রোগীটি ঠিক ১৫ দিন পর পর আমার চেম্বারে এসে সেলেনিয়াম ৩০ শক্তির ১ ফোঁটা ঔষধ খেয়েছেন। সর্বমােট ৩ বার খাওয়ানোর পর বুঝতে পারি ঔষধটি তার আরোগ্যকারী ফলাফল প্রকাশ করা শুরু করেছে।

রোগীর রোগলক্ষণ ধীরে ধীরে কমে আসছে। আমি ঔষধ খাওয়ানো বন্ধ করে অপেক্ষা করার নীতি গ্রহণ করি। পরবর্তীতে ৩ মাস অপেক্ষা করেছিলাম। ৩ মাস পর আরও ২ বার ৩০ শক্তির সেলেনিয়াম শক্তি পরিবর্তন রীতি অনুসারে প্রয়োগ করেছি। রোগী প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আমি তার অর্শের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি মতে কিভাবে রোগী আরোগ্য করা যায়

রোগীটি যে শিক্ষা আমাকে দিয়েছে তা ভুলবার নয়। তা হচ্ছে- হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় তখনই সফলতা পাওয়া যায় যখন ঔষধটি নির্বাচন করা হয় সামগ্রীক লক্ষণসমষ্টির ওপর ভিত্তি করে।

শুধু তাই নয়। চিকিৎসার নিয়ম রক্ষা করাটা তার চাইতেও বেশী জরুরী। কেননা, একটি নির্দিষ্ট ঔষধ প্রয়োগ করে তার কার্যকারিতা কতটুকু তা যাচাই করার জন্য ঔষধকে যথেষ্ট সময় নিয়ে শরীরে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে। তা না দিয়ে যদি বার বার ঔষধ প্রয়োগ করে শরীরকে আরও বেশী অসুস্থ করার দিকে মনোযোগী হই তবে ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়।

চিকিৎসার্থে যোগাযোগ করুন-

আরোগ্য হোমিও হল

প্রতিষ্ঠাতা : মৃত : ডা: আজিজুর রহমান 

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না)

বিএসএস, ডিএইচ এমএস (ঢাকা)

ডা: মোসা: অজিফা রহমান (ঝর্না)

 ডিএইচ এমএস (ঢাকা)

রেজি নং- ১৬৯৪২

স্থাপিত - ১৯৬২

মথুর ডাঙ্গা, সপুরা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।

মোবাইল - ০১৭১৮১৬৮৯৫৪

arh091083@gmail.com 

hafizurrahman2061980@gmail.com





শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: