সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১

স্তন টিউমার ও স্তন ক্যান্সারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা



স্তন টিউমার ও স্তন ক্যান্সারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

মহিলাদের স্তন টিউমার (ব্রেস্ট টিউমার) হওয়া বর্তমানে কমন একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে অনেক নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। কোন কারণে কোষের বিভাজন ও ধ্বংসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ বাধাগ্রস্ত হলে টিউমার তৈরি হয়ে থাকে।

স্তন টিউমার সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই যে কথাটা বলতে হয় তা হল বর্তমানে মহিলারা আগের থেকে অনেক সচেতন এবং বাড়ির সবার স্বাস্থ্যরক্ষার পাশাপাশি তারা নিজেদের সমস্যা নিয়ে অনেক বেশি ডাক্তারের কাছে যান ও সচেতনতা মুলক ক্যাম্প গুলোতে অংশ গ্রহণ করেন।

কিন্তু এখনও সমাজে অনেকরকম কুসংস্কার রয়ে গেছে। ফলে ব্রেস্ট বা স্তনে টিউমার হলে মহিলারা প্রথমেই মনে করেন বোধহয় স্তনে ক্যানসার হয়েছে। কোন লাম্প বা ফোলা তৈরি হলেই যে ক্যান্সার এটা ঠিক না।

টিউমারের প্রকারভেদ :-

স্তনে দুই ধরনের টিউমার হয়। অবশ্য শরীরের যেকোনো জায়ঘাতেই এই দুই ধরনের টিউমার হয়। একটা হল বিনাইন টিউমার যা নন ক্যান্সার টিউমার এবং অন্যটা হল ম্যালিগ্যান্ট বা ক্যান্সার টিউমার।

বিনাইন টিউমার যেকোন বয়সেই হতে পারে। অর্থাৎ সাত বছর থেকে সত্তর বছর যেকোনো বয়সেই দেখা যেতে পারে। ম্যালিগ্যান্ট টিউমার বিদেশে সাধরণত চল্লিশ-পয়তাল্লিশ বছর বয়সে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ত্রিশ বছর বয়সেও খুব অল্প সংখ্যায় দেখা যায়।

বিনাইন টিউমার :

বিনাইন টিউমার সম্বন্ধে বলতে গেলে খুব পরিচিত যে টিউমারটি দেখা যায় তা হল ফাইব্রোঅ্যাডিনোমা। যেটা কিন্তু পনেরো বছর বয়স থেকে আঠারো কি কুড়ি-বাইশের মেয়েদের দেখা যায়। শক্ত চাকার মতো, এক জায়ঘায় ধরলে অন্য জায়গায় পালিয়ে যায়। এই টিউমারটার আসলে গঠনগত ক্রটি দেখা যায় এবং সম্পূর্ণ বিনাইন। এই টিউমার থেকে ক্যানসার হবার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। আর যেহেতু এই টিউমারগুলো থেকে ক্যানসার হবার সম্ভাবনা নেই, তাই এই টিউমারগুলোকে সত্যি। অপারেশন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ওষুধেও এই টিউমারগুলো সারে না। বিদেশে কতগুলো পরীক্ষা করে নেওয়া হয়। এরপর মেয়েটিকে জিঞ্জাসা করা হয় সে কি চায়? আজকালকার দিনে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করাই বাঞ্ছনীয়। কেউ যদি বলে ডাক্তার আমার অপারেশন করার ইচ্ছা নেই সেক্ষেত্রে কিন্তু গভীর পরীক্ষার মাধ্যমে নজর রাখা সম্ভভ। মজার ব্যাপার হল বহুক্ষেত্রেই দেখা গেছে ম্যামোগ্রামে ধরা পড়া ফাইব্রো অ্যাডিনোমাটি ষাট বা সত্তর বছর বয়সেও ম্যামোগ্রামে দেখা যাচ্ছে। তখনও  একটা ছোট্র মটরশুটির মতো দানা হয়ে রয়েছে। তাহলে ধারণা করা যেতে পারে যে এতদিন অবধি কোনো পরিবর্তন না হওয়া টিউমারটি মেরে ফেলার টিউমার নয়। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই অবজার্ভেশনে রাখা চলে। তবে রোগীর যদি মনের জোর থাকে তাহলে অবজার্ভেশনে রাখা চলে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় মুশকিল হয় পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি। সেক্ষেত্রে দরকার হল নিয়মিত চেক আপ। অর্থাৎ জায়গাটা বাড়ছে কি না, ব্যথা হচ্ছে কি না। যদি দেখা যায় জিনিসটা বেড়েছে বা ব্যথা হয়েছে তাহলে তখন তো অপারেশনের রাস্তা খোলাই রয়েছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে এসব ক্ষেত্রে ওষুধে সারবে না। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছর পরে নতুন করে কোনো ফাইব্রয়েড অ্যাডিনোমা তৈরি হয় না।

সিস্ট কাকে বলে :

আর এক ধরনের লাম্প হচ্ছে সিস্ট। সিস্ট জিনিসটা হল একটা জলভরা থলি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যেরকম লোকের চুল পাকে তেমনি ব্রেস্টে কিংবা কিডনিতে সিস্ট আসবে, কিছু কিছু কোষ মরে যাবে, সেই জায়গাটা ফাঁকা হয়ে যাবে। একটু জল ভরে যাবে জায়গাটা। সেটাকেই সিস্ট বলে। আর এই সিস্টগুলো থেকে কখনোই ক্যানসার হয় না। তবে কিছু কিছু ক্যানসার আছে যারা সিস্ট নিয়ে বয়ে বেড়ায়। একশোটা সিস্টের মধ্যে নিরাসব্বইটাই কিন্তু বিনাইন বা নন ক্যানসারাস দেখা যায়।

বাচ্চাদের দুধ খাওয়াতে গিয়ে অনকে সময় স্তনে দুধ জমে যায়। ঠিকমতো দুধটা না বেরোনোর জন্য রয়ে গেল। সেটাও একটা সিস্ট। পার্থক্য হল একটা সিস্টে দুধ আছে, অন্য সিস্টে জল রয়েছে। কিন্তু দুধটা জমে থাকার দরুন আদৌ কোনো অসুবিধা হয় না। তাহলে সিস্টের মতো চাকা বা সিস্ট নিয়ে যদি কেউ আসে তাহলে এক্ষেত্রেও অপারেশনের দরকার পড়ে না।

আলট্রাসোনোগ্রাফি করে সিস্ট নির্ধারণ হয়ে গেলে ক্লিনিকেই নিডল সিরিঞ্জের সাহায্যে একটু বার করে দিলেই দুধ কিংবা জল যাই হোক সমস্যা মিটে যাবে। কাটাকুটি করার প্রয়োজন নেই। এটা করলেই পুরোপুরি নিরাময়।

স্তন ক্যানসার :

ব্রেস্ট ক্যানসার সম্বন্ধে বলতে গেলে প্রথমেই বলব ‘ব্রেস্ট ক্যানসার’ সেরে যায়। এফ.এন.এ.সি বা ‘কোর বায়োপসি’ করলে ক্যানসার কোনো দিনও ছড়ায় না। ব্রেস্ট ক্যানসার একটা মাল্টি সিস্টেমিক ডিজিজ। শুধু ব্রেস্ট ছাড়া অন্যান্য অঙ্গেরও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। সেই কারণে ব্রেস্ট ক্যানাসরের চিকিৎসা করাতে একজন সার্জেন ছাড়াও একজন মেডিকেল অষ্কোলজিস্ট আর একজন রেডিওথেরাপিস্টের মিলিত প্রয়াসে সুসম্পন্ন হয় এবং অবশ্যই সাহায্যের জন্য দক্ষ নার্স ও কাউন্সেলরেরও প্রয়োজন। এভাবে একটা টিম তৈরি হয়। যাদের মিলিত প্রচেষ্ট থাকে রোগীকে সমস্ত রকম উদ্বেগ ও চিন্তা থেকে মুক্ত রাখা।



লক্ষণ :

ক/ ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণে রোগীরা সাধারণত লাম্প, নিপল ঢুকে যাওয়া, বুতে চাকা বা গাঁট অনুভব করেন। অনক সময়স্তনবৃন্ত থেকে লাল রঙের রস বা রক্ত বের হয়।

খ/ কমবেশি সব মহিলাদের স্তনেই লাম্প থাকে। এর মধ্যে কয়েকটি ক্যানসারাস ও কয়েকটি নন-ক্যানসারাস। এই ব্রেস্ট লাম্পগুলি অনেক সময় আন্ডারআর্ম বা কলার বোনের তলাতেও দেখা যায়। এছাড়া স্তনবৃন্তের আশপাশেও এই ধরনের লাম্প থাকে যেগুলি টিপলে শক্ত লাগে এবং অবস্থান পরিবর্তন করে না। এমন কিছু দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। 

গ/ কোনও রকম র‌্যাশ নেই স্তনে, তবু ইচিং বা চুলকানির মতো অনুভূতি হচ্ছে, এমন কিছু কিন্তু ক্যানসারের লক্ষণ। অনেক সময় এর সঙ্গে নিপ্‌ল থেকে হালকা হালকা রস‌ নিঃসৃত হয়, স্তনের ত্বকেও কিছুটা পরিবর্তন আসে। তাই চুলকানির মতো কিছু হলে নিজে থেকে কোনও ক্রিম বা লোশন লাগাবেন না। আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলবেন। 

গ/ স্তনে টিউমার থাকলে তা আশপাশের ব্রেস্ট টিস্যুগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং তার ফলে স্তনে একটা ফোলা ফোলা ভাব দেখা যায়। এরই সঙ্গে স্তনে লাল ভাবও থাকে। স্তনে হাত দিলে বা চাপ দিলে ব্যথাও লাগে।

ঘ/ কাঁধ এবং ঘাড়ের ব্যথাও ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে কারণ এই ক্যানসার স্তন থেকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে শরীরের এই অংশগুলিতে। এই সমস্ত জায়গায় ব্যথা হলে সাধারণের পক্ষে জানা সম্ভব নয় তা মাস্‌ল পেইন নাকি ক্যানসারের কারণে ঘটছে। তাই পরীক্ষা করে নেওয়াই ভাল। 

ঙ/ স্তনের আকার এবং সাইজ পরিবর্তনও এই ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। সচরাচর এই বিষয়টি পার্টনারের চোখেই বেশি পড়ে। তেমন কিছু শুনলে বিষয়টি উড়িয়ে দেবেন না। নিজেই আয়নার সামনে স্তনটি পরীক্ষা করুন এবং ক্যানসারের পরীক্ষা করিয়ে নিন।

চ/ স্তনে লাম্প সব সময় বড় আকারের হয় না। ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো লাম্পও দেখা যায় স্তনবৃন্তের আশপাশে। অন্তর্বাস পরে থাকার সময় যদি ঘর্ষণ অনুভব করেন, বিছানায় শোওয়ার সময় যদি ব্যথা লাগে তবে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করবেন না। 

জ/ ব্রেস্টফিডিং করছেন না অথচ স্তনবৃন্ত থেকে অল্প অল্প দুধের মতো জলীয় পদার্থ নিঃসরণ হচ্ছে এমনটা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাবেন। এটি ব্রেস্ট ক্যানসারের অন্যতম বড় লক্ষণ। অনেক সময় স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত পড়তেও দেখা যায়।

ঝ/ স্তনবৃন্ত হল স্তনের অসম্ভব সংবেদনশীল অংশ। যদি দেখেন যে স্তনবৃন্ত স্পর্শ করলেও তেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে না বা একেবারেই অনুভূতিহীন হয়ে গিয়েছে তবে তা ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। স্তনবৃন্তের ত্বকের তলায় ছোট ছোট টিউমার তৈরি হলেই এমনটা হয়। 

ঞ/ স্তনবৃন্ত চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া, বেঁকে যাওয়া বা স্তনবৃন্তের শেপ অসমান হয়ে যাওয়া ক্যানসারের লক্ষণ, বিশেষ করে যদি ব্রেস্টফিডিং না চলাকালীন অবস্থাতেও এই বিষয়গুলি চোখে পড়ে। সঙ্গীকে বলুন ভাল করে পর্যবেক্ষণ করতে। সামান্য সন্দেহ হলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

ট/ স্তনের উপরের ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া, অনেকটা কমলালেবুর খোসার মতো, ক্যানসারের প্রাথমিক স্টেজের লক্ষণ। দিনের মধ্যে একটা সময় তাই ভালভাবে স্তনটি পর্যবেক্ষণ করা উচিত। যে কোনও লক্ষণ চোখে পড়লেই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করান।

স্তন টিউমার এর কারণ : 

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ইৎবংঃ ঞঁসড়ঁৎ বা ঈধহপবৎ এর কারণ হিসেবে মায়াজমকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাইকোসিস ও টিউবারকুলোসিস মায়াজম ও সক্রিয় থাকতে পারে। এছাড়া পারিবারিক বা বংশগত ইতিহাসে কারও ক্যান্সার হয়ে থাকলে ওই মায়াজমটি ইৎবংঃ ঈধহপবৎ-এর ঝুঁকিটা আরও বাড়িয়ে দেয়।

ডিজিটাল বিজ্ঞান এখনো স্তনের টিউমার বা ক্যান্সার জাতীয় টিউমারের কারণ খুঁজে বের করতে পারেনি। তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণকে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ইৎবংঃ ঞঁসড়ঁৎ-এর কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন। যেমন: 

১। কোন আঘাতজনিত কারণে স্তনের ঞরংংঁব বা কোষ নষ্ট হয়ে গেলে।

২। অনেক বেশি বয়সে প্রথমে গর্ভধারণ। 

৩। বাচ্চাকে যদি স্তনের দুধ পান করানো না হয়। 

৪। যেসব পরিবারে ক্যান্সার বা ব্রেস্ট ক্যান্সারের ইতিহাস পাওয়া যায়। 

৫। ইস্টোজেন ও প্রজেস্টোরেন হরমোনের আনুপাতিক বৈষম্য তেজষ্ক্রিয় আয়নের প্রভাবের কারণে। 

৬। মাসিক হচ্ছে একটি বড় কারণ।

৭। কম বয়সে মাসিক হওয়া এবং বেশি বয়সে বন্ধ হয়। 

৮। এছাড়া রেডিয়েশনের প্রভাবেও টিউমার ও ক্যান্সার হতে পারে।



ক্যান্সারের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার সুফল

হোমিওপ্যাথি গবেষক ও চিকিৎসক ডা. বার্নেট তাঁর ক্লিনিক্যাল গবেষণায় লক্ষ্য করেন যে, একটি বা দুটি হোমিওপ্যাথি ঔষধ ব্যবহারে প্রায়ই টিউমার এবং ক্যান্সার সারানো যায় না। কারণ টিউমার/ক্যান্সারের পেছনে সাধারণত অনেকগুলো কারণ (খরহশ) থাকে । আর একেকটি কারণ দূর করতে একেক ধরনের ঔষধের প্রয়োজন হয়। তিনি পিত্তপাথর থেকে কোলেস্টেরিনাম (ঈযড়ষবংঃবৎরহঁস) নামক একটি ঔষধ আবিষ্কার করেন যা দিয়ে অনেক লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সার তিনি নির্মুল করেছেন। হোমিওপ্যাথিতে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যর্থতার একটি মুল কারণ হলো রোগীর জীবনীশক্তিহীনতা বা মারাত্মক শারীরিক দুর্বলতা (ষড়ি ারঃধষরঃু) ।

অধিকাংশ রোগী কবিরাজি এবং এলোপ্যাথিক চিকিৎসা করে শরীরের বারোটা বাজিয়ে যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়, তখন আসে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের কাছে। অবাক লাগে যখন দেখা যায়, লোকেরা স্তন টিউমার এবং স্তন ক্যান্সারের মতো সহজ রোগে অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ইত্যাদি করে ধ্যানাধ্যান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অথচ অকল্পনীয় শক্তিশালী হোমিওপ্যাথি ঔষধের কাছে স্তন টিউমার এবং স্তন ক্যান্সার একেবারে সহজ রোগ।

স্তন টিউমার সম্পর্কে হোমিওপ্যাথি গবেষক ও চিকিৎসক ডা. বার্নেট একটি মজার গল্প লিখে গেছেন। এক মহিলার স্তনে ক্যান্সার হলে বার্নেট প্রায় দেড় বৎসর হোমিওপ্যাথি ঔষধ খাইয়ে বিনা অপারেশনে সেটি সারিয়ে দেন। কিছুদিন পর সেই মহিলা তার এক বান্ধবীকে ডা. বার্নেটের কাছে নিয়ে আসেন, যার ডান স্তনে একটি টিউমার হয়েছে। ভদ্র মহিলা ডা. বার্নেটকে জিজ্ঞেস করলেন, “এটি নিরাময় করতে আপনার কত দিন লাগবে?”। বার্নেট বললেন, “দুই বৎসর”। ভদ্র মহিলা বললেন, “তাহলে আমি অপারেশন করাকেই ভালো মনে করি। কেননা তাতে মাত্র পনের দিন লাগে”। তারপর সে অপারেশন করাল এবং অপারেশনের ছয় মাস পরে তার বাম স্তনে আবার টিউমার দেখা দিল। বাম স্তনে টিউমার আবার অপারেশন করে ফেলে দেওয়ার ছয়মাস পরে তার জরায়ুতে ক্যান্সার দেখা দেয়। জরায়ুতে অপারেশনের কিছুদিন পর সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। এভাবে দুই বছর ঔষধ খাওয়া যার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়েছিল, তিন তিনটি অপারেশনের ধাক্কায় দেড় বছরের মধ্যে সে দুনিয়া ছেড়ে বিদায় নিল। 

হায় ! নির্বোধ মানুষেরা সব বিষয়ে কেবল শর্টকার্ট রাস্তা খোঁজে, কিন্তু তারা বুঝতে চায় না যে, শর্টকার্ট রাস্তা প্রায় সবক্ষেত্রেই মানুষের জন্য ধ্বংস ডেকে আনে।

হোমিওপ্যাথিকে বলা হয় পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা বিজ্ঞান (যড়ষরংঃরপ যবধষরহম ংপরবহপব) অথবা মনো-দৈহিক গঠনগত (ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হধষ সবফরপরহব) চিকিৎসা বিজ্ঞান। অর্থাৎ এতে কেবল রোগকে টার্গেট করে চিকিৎসা করা হয় না বরং সাথে সাথে রোগীকেও টার্গেট করে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর শারীরিক এবং মানসিক গঠনে কি কি ত্রুটি আছে (পড়হমবহরঃধষ ফবভবপঃ), সেগুলোকে একজন হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক খুঁজে বের করে তাকে সংশোধনের চেষ্টা করেন। রোগটা কি জানার পাশাপাশি তিনি রোগীর মন-মানসিকতা কেমন, রোগীর আবেগ-অনুভূতি কেমন, রোগীর পছন্দ-অপছন্দ কেমন, রোগী কি কি জিনিসকে ভয় পায়, কি ধরণের স্বপ্ন দেখে, ঘাম কেমন, ঘুম কেমন, পায়খানা-প্রস্রাব কেমন, কি পেশায় নিয়োজিত আছে, কি কি রোগ সাধারণত তার বেশী বেশী হয়, অতীতে কি কি রোগ হয়েছিল, বংশে কি কি রোগ বেশী দেখা যায়, রোগীর মনের ওপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি জেনে রোগীর ব্যক্তিত্ব (রহফরারফঁধষরঃু) বুঝার চেষ্টা করেন এবং সেই অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করেন। এই কারণে হোমিওপ্যাথিক ঔষধে এমন রোগও সেরে যায়, যা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে কল্পনাও করা যায় না। একজন হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক রোগীর শারীরিক কষ্টের চাইতে বেশী গুরুত্ব দেন রোগীর মানসিক অবস্থাকে। কেননা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, অধিকাংশ জটিল রোগের সূচনা হয় মানসিক আঘাত (সবহঃধষ ংযড়পশ) কিংবা মানসিক অস্থিরতা/উৎকন্ঠা/দুঃশ্চিনতা (ধহীরবঃু) থেকে। মোটকথা অধিকাংশ মারাত্মক রোগের প্রথম শুরুটা হয় মনে এবং পরে তা ধীরে ধীরে শরীরে প্রকাশ পায়। এজন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলতেন যে, মনই হলো গিয়ে আসল মানুষটা (সরহফ রং ঃযব সধহ)। তাছাড়া পৃথিবীতে হোমিওপ্যাথি ঔষধই একমাত্র ঔষধ যাকে মানুষের শরীর এবং মনের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবিষ্কার করা হয়েছে। পক্ষান্তরে দুনিয়ার অন্য সমসত্ম ঔষধই আবিষ্কার করা হয় ইঁদুর-খরগোশ-গিনপিগ ইত্যাদি পশুদের শরীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। এই কারণে হোমিওপ্যাথি ঔষধ মানুষের শরীর ও মনকে যতটা বুঝতে পারে, অন্য কোন ঔষধের পক্ষেই তা সম্ভব নয়।

টিউমার এবং ক্যান্সার চিকিৎসায় আমাদের সকলেরই উচিত প্রথমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা অবলম্বন করা। কেননা, কেমোথেরাপি, অপারেশন, রেডিয়েশন ইত্যাদি শতকরা নিরানব্বই ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যুকে দ্রুত ডেকে আনে। হোমিওপ্যাথিতে টিউমার/ক্যান্সার চিকিৎসার আরেকটি বিরাট সুবিধা হলো এতে শতকরা নিরানব্বই ভাগ ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল, কষ্টদায়ক এবং ক্ষতিকারক কোন প্যাথলজিক্যাল টেস্টের দরকার হয় না। (যেমন-বায়োপসি, মেমোগ্রাফী, এক্স-রে, সিটি ষ্ক্যান (ঈঞ ংপধহ), এমআরআই (গজও) ইত্যাদি)। কেননা হোমিওপ্যাথিতে ঔষধ দেওয়া হয় রোগীর শারীরিক গঠন এবং মানসিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। যারা ইতিমধ্যে কেমোথেরাপি, অপারেশন, রেডিয়েশান ইত্যাদি অপচিকিৎসা নিয়ে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে গেছেন, তাদেরও কাল বিলম্ব না করে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। ইহার মাধ্যমে তারা ঐসব কুচিকিৎসার কুফল থেকে মুক্ত হয়ে আবারও রোগমুক্ত সুস্থ-সুন্দর জীবনধারায় ফিরে আসতে সক্ষম হবেন। যেহেতু আমাদের দেশে মেধাসম্পন্ন হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে, তারপরও হোমিওপ্যাথি আরোও আয়ত্ব করে হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রেসক্রাইব করা এবং হোমিওপ্যাথদের জন্য সরকারি সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করা। কেননা হোমিওপ্যাথি ঔষধ একই সাথে রোগের জন্যও ভালো এবং রোগীর চিকিৎসা ব্যয়ও কমিয়ে দেয় অনেক। এমনকি যে-সব ক্ষেত্রে ক্যান্সার সারা শরীরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার কারণে রোগীকে বাচাঁনো কোন মতেই সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রোগীর যাবতীয় অমানুষিক কষ্টসমূহ নিয়ন্ত্রণে রাখার চিকিৎসাতেও (ঢ়ধষষরধঃরাব ঃৎবধঃসবহঃ) হোমিওপ্যাথি ঔষধ অন্য যে-কোন ঔষধের চাইতে সেরা প্রমাণিত হয়ে থাকে। তাই যে-সব সেবামুলক সংস্থা মানুষকে ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবা প্রদানরত আছে, তারা ইচ্ছে করলে ক্যানসারের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একই পয়সায় আরো অনেক বেশী মানুষকে প্রকৃত চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারেন। (সূত্র : ঈ.ই গ ঊরষষরধং ্ ঙঃযবৎং)

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা : 

===============

রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আধুনিক ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ও কষ্টকর থেরাপি ছাড়াই সুস্থতা লাভ করা সম্ভব এবং রোগীর লক্ষণগুলো সংগ্রহ করে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করতে পারলে তাহলে ব্রেস্ট টিউমার ও জরায়ু টিউমার ব্যাধিতে হোমিওপ্যাথিতে সফল চিকিৎসা দেয়া সম্ভব।

আপনার যে কোন রোগব্যাধির যে কোন সমস্যায় সর্বদা লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা প্রদানে পাশে আছি। রোগ লক্ষণ যত কঠিন হোক না কেন, রোগলক্ষণ প্রাথমিক বা দ্বিতীয় অবস্থায় সংশ্লিষ্ট রোগলক্ষণ বিষয়ে একজন বিশেষ অভিজ্ঞ রেজির্ষ্টাড হোমিওপ্যাথ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে আপনার ব্যাধি আরোগ্য হবেই।

মানব দেহ মনে সৃষ্ট, জন্মগত, বংশগত অথবা এই জীবনে অর্জিত পুরুষ, মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ সহ যে কোন বয়সীদের যেকোন ব্যক্তিগত বা গোপনীয় রোগব্যাধি, যেকোন পুরাতন রোগব্যাধি বা ক্রনিক ডিজিজ ও ক্যান্সার সহ যেকোন প্রকার রোগব্যাধির লক্ষণভিত্তিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য যোগাযোগ করুন।

নিরাপদ ও স্থায়ী চিকিৎসার জন্য আপনার যে কোন রোগব্যাধির যে কোন সমস্যায় সর্বদা পাশে আছি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বীকৃত বিজ্ঞানসম্মত প্রাকৃতিক ও নিরাপদ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গভ. রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের নিকট হতে গ্রহণ করুন এবং সুস্থ থাকুন।

যোগাযোগ -

আরোগ্য হোমিও হল

প্রতিষ্ঠাতা : মৃত : ডা: আজিজুর রহমান 

ডা: মো: হাফিজুর রহমান (পান্না)

বিএসএস, ডিএইচ এমএস (ঢাকা)

ডা: মোসা: অজিফা রহমান (ঝর্না)

 ডিএইচ এমএস (ঢাকা)

রেজি নং- ১৬৯৪২

মথুর ডাঙ্গা, সপুরা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।

মোবাইল - ০১৭১৮১৬৮৯৫৪

arh091083@gmail.com 

hafizurrahman2061980@gmail.com


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: